ভোটে নির্বাচিত হলো সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব

প্রকাশিত: 3:02 AM, February 8, 2016

ভোটে নির্বাচিত হলো সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব

নেতৃত্বের অগ্নিপরীক্ষায় ঘাম ঝরালেন সিলেট বিএনপি নেতারা। কেউ হারলেন, কেউ জিতলেন। কিন্তু দিনশেষে হিসেবে এগিয়ে গেল দল। এমন ঘটনা সিলেট বিএনপির ইতিহাসে বিরল। এভাবে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে নেতৃত্ব নির্ধারণ হবে – এমন ঘটনা নিকট অতীতেও ছিল কল্পনা। কিন্তু তাই ঘটলো গতকাল সিলেটে। বাঘা-বাঘা নেতার মুখে কালোছায়া। বিমর্ষতা তাদের ঘিরে ফেলেছে। কাউন্সিলকে ঘিরে গতকাল এমন চিত্র ফুটে উঠেছে সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ প্রাঙ্গণে। কাউন্সিল শুরু হওয়ার অনেক আগেই তারা পৌঁছে যান কাউন্সিলস্থলে। এক এক করে কাউন্সিলররা এসে যখন ঢুকছিলেন, তখন তাদের সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে করমর্দন করছেন গুরুত্বপূর্ণ পদবিতে দাঁড়ানো নেতারা। কেউ কেউ তাদের জড়িয়ে ধরছেন অতি আদরে। কাউন্সিল শুরু হওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত তারা কাউন্সিলরদের এভাবে সমাদরে রাখেন। গতকাল এভাবেই সিলেট জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হলো। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ শেষ হয়ে যায় দেড়টার মধ্যে। আর পৌনে ২টার মধ্যে কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতেই ঘোষণা করা হয় ফলাফল। ঘোষিত ফলে সিলেট জেলা বিএনপির নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আবুল কাহের শামীম আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এমরান আহমদ চৌধুরী ও হাসান পাটওয়ারী রিপনের ভোট সমান সমান হওয়ায় কাউকে এ পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়নি। পরবর্তীকালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ভোটে মহানগর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সহসভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব বদরুজ্জামান সেলিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মিফতাহ সিদ্দিকী। ভোট শেষ হওয়ার পর জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল হক ও মহানগর নেতা আহাদুস সামাদ জানিয়েছেন, ভোটে কোনো ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কাউন্সিলররা শান্তিপূর্ণভাবেই নেতা নির্বাচন করেন। এদিকে, ফলাফল ঘোষণার পর কাউন্সিলস্থল ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে, কাউন্সিলের পর বিজয়ী নেতাদের সমর্থকরা সম্মেলনস্থল ও আশপাশে উল্লাস প্রকাশ করেন। এ সময় একটি মিছিল মুসলিম সাহিত্য সংসদের সামনে থেকে বিজয় মিছিল বের করতে চাইলে নির্বাচিতরা গিয়ে দমিয়ে দেন। এ সময় অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ দল নিয়ে এগিয়ে আসেন। এদিকে, নির্বাচনে জয়লাভের পর সিলেট জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সিলেট বিএনপিকে এগিয়ে নেয়াই হচ্ছে প্রধান কাজ। সিলেট জাতীয়তাবাদী শক্তির ঘাঁটি। নেতাকর্মীদের মধ্যে আস্থা ফেরাতে পারলেই দল অনেক এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। আর সবাইকে শুভেচ্ছা জানান মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইনও। তিনি বলেন, বিএনপি সিলেটে আগামী দিনে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান তিনি। কার কত ভোট : সিলেট ও মহানগর বিএনপির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে রোববার। সম্মেলনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সিলেট বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি শাখার নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। নির্বাচনে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি পদে বিজয়ী হওয়া আবুল কাহের শামীম পেয়েছেন ২৭ ভোট। এ পদে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিম পান ২২ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী আলী আহমদ পেয়েছেন ২৭ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সামসুজ্জামান জামান পেয়েছেন ২২ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এমরান আহমদ চৌধুরী ও রিপন পাটোয়ারী সমানসংখ্যক ১২টি করে ভোট পান। এ ছাড়া এ পদে লড়াই করা আবদুল আহাদ খান জামাল ১১, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু ১০, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান পেয়েছে ৪ ভোট। এদিকে, সিলেট মহানগরে নির্বাচনে সভাপতি পদে বিজয়ী হওয়া নাসিম হোসাইন পেয়েছেন ৪৪ ভোট। এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বীকারী অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ২৮ এবং আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী পেয়েছেন ৬ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী বদরুজ্জামান সেলিম পেয়েছেন ৫৩ ভোট। এ পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ফরহাদ চৌধুরী শামীম ২১ ও রেজাউল হাসান কয়েস লোদী পেয়েছেন ৪ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বিজয়ী মিফতাহ সিদ্দিকী পান ১৮ ভোট। এ ছাড়া এ পদে লড়াই করা এমদান হোসেন চৌধুরী ১৬, আজমল বখত সাদেক ১৩, হুমায়ুন কবীর শাহীন ১০ ও অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ ৮ ভোট পেয়েছেন।

[the_ad id=”312″]

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংবাদটি 118 বার পঠিত হয়েছে

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ