মেট্রোরেলের কাজ শুরু মার্চে, থাকছে ১৬টি স্টেশন

প্রকাশিত: 3:03 AM, January 28, 2016

মেট্রোরেলের কাজ শুরু মার্চে, থাকছে ১৬টি স্টেশন

নিউজ ডেস্ক  রাজধানী ঢাকায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেলের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ (গ্রাউন্ড ব্রেকিং) আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে শুরু হবে।

ঢাকা ম্যাস র্যা পিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (ডিএমআরটিডি) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বুধবার রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ডিএমআরটিডি প্রকল্পের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এই আশা ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, ডিএমআরটিডি প্রকল্পের আওতায় মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের কাজ আংশিকভাবে ২০১৯ সালে সম্পন্ন হবে এবং আর পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে ২০২০ সালে।

ডিএমআরটিডি প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে পুননির্ধারিত সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সার্ভে কাজ শেষ হয়েছে। বেসিক ডিজাইন শেষ হয়েছে। ডিটেইল ডিজাইন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। বিভিন্ন প্যাকেজের প্রি-কোয়ালিফিকেশন এবং মূল বিডিং বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। ডিএমটিসি’র প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা চূড়ান্ত করার জন্য ইনস্টিটিউশনাল ডেভেলপমেন্ট কনসালট্যান্ট-এর কার্যক্রমও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’

তিনি বলেন, প্রযুক্তি নির্ভর যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে মেট্রোরেল বর্তমানে একটি সুপরিচিত গণপরিবহন ব্যবস্থা। দ্রুত নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন হিসেবে মেট্রোরেল উন্নত বিশ্বসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যাত্রী সাধারণের নিকট ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। রাজধানী ঢাকায় এ উন্নত গণপরিবহন মেট্রোরেল ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে সরকার ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ডিএমআরটিডি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্মাণকাজ শেষ হবার পর এটি ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও যানজট নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে জাইকার সাথে ঋণ চুক্তির স্বাক্ষরিত হয় ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তির মধ্য দিয়ে কার্যত শুরু হয় বহুল আলোচিত মেট্রোরেল স্থাপনের কার্যক্রম। ২১ হাজার ৯৮৫.০৭ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ এ প্রকল্প দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার এই মেট্রোরেল প্রকল্পে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। এগুলো হলো- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল।

ম্যাস র্যা পিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ এর রুট এলাইনমেন্ট হচ্ছে- উত্তরা ৩য় ফেইজ-পল্লবী-রোকেয়া সরণীর পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ী হয়ে ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।

ডিএমআরটিডি প্রকল্প পরিচালক বলেন, স্টেশনগুলোর লোকেশন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প কাজের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের কোনো ক্ষতি সাধন হবে না। এছাড়া, দোয়েল চত্বরে কোনো স্টেশন নির্মানের পরিকল্পনা নেই। ইউনিভার্সিটির কোনো স্থাপনা ওপর দিয়ে কোনো লাইন যাবে না, কোনো স্থাপনা ভাঙ্গা হবে না ।

মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্পের জিওটেকনিক্যাল সার্ভে ২০১৪ সালের ৩ জুলাই কার্যক্রম শুরু করে এবং মাঠ পর্যায়ের কাজ ২০১৫ সালের মে মাসে শেষ হয়। এ সার্ভে কাজের ল্যাবরেটরি ওয়ার্ক ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয় এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এছাড়া ফিল্ড ওয়ার্ক ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ল্যাবরেটরি ওয়ার্ক-এর কিছু অংশ বাকী রয়েছে। আশা করা যায়, আগামী মাসে এসব ল্যাবরেটরি ওয়ার্কও শেষ হয়ে যাবে।’

ডিএমআরটিডি প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় মোট ২১,৯৮৫.০৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকার খরচ করবে (জিওবি) ৫,৩৯০.৪৮ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা দেবে ১৬,৫৯৪.৫৯ কোটি টাকা।

এই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০১২ থেকে জুন ২০২৪ সাল। এ ব্যাপারে জাইকার সাথে ঋণ চুক্তির স্বাক্ষরিত হয় ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।

মতবিনিময়ে জানানো হয়েছে, এতে রোলিং স্টক থাকবে ২৪ সেট (প্রত্যেক সেটে ৬টি কার থাকবে)। এই রেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা প্রতি ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার হবে। যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা প্রতি ঘন্টায় উভয় দিকে ৬০,০০০।

মতবিনিময় সভায় ডিএমআরটিডি প্রকল্পের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মোহাম্মদ নুরুল আমিনসহ প্রকল্পের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংবাদটি 84 বার পঠিত হয়েছে

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ